কোটি কোটি টাকার গয়নায় মোড়া থাকত তাঁর গা। নিত্য়দিনের প্রসাধনীর খরচ শুনলে চোখ কপালে উঠবে আম আদমির। এখনও বিশ্বের সবচেয়ে ধনী মহিলার তালিকায় প্রথম স্থানে রয়েছেন তিনি। না, কোনও শিল্পপতির স্ত্রী নন।

ইতিহাসের সবচেয়ে ধনী রানী কে? এই নিয়ে সম্প্রতি একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে Money.com নামের এক সংস্থা। সেখানেই চিনের রানি উ-র (Empress of China Wu) কথা বলা হয়েছে। ১৬ ট্রিলিয়ান মার্কিন ডলারের সম্পত্তি ছিল তাঁর।

ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ১৩ কোটি ২১ লাখ ১৭ হাজার ৬৮০ কোটি টাকা। Money.com-র দাবি, বর্তমানে সময় ব্যাটারি চালিক গাড়ি টেসলা ও Twitter কর্ণধার এলন মাস্ক, অ্যামাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস ও ভারতীয় শিল্পপতি তথা রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের মুকেশ আম্বানির মিলিত সম্পত্তির চেয়ে বেশি অর্থ ছিল চিনা রানির উ-র। মাত্র ১৫ বছরের রাজত্বকালে এই বিপুল সম্পত্তির মালকিন হন ডাকসাইটের সুন্দরী ড্রাগনল্যান্ডের সাম্রাজ্ঞী।

ঐতিহাসিকদের দাবি, ৬৯০ খ্রিষ্টাব্দের ১৬ অক্টোবর সিংহাসনে বসেন টাং রাজবংশের মেয়ে উ। শাসনভার হাতে নিয়েই দেশের সীমানা বিস্তারে মন দেন তিনি। তাঁর আমলেই প্রথম মধ্য এশিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে চিনা সাম্রাজ্য। The China Project-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, চা আর রেশম ব্যবসায় মন দেন উ। আর এর জন্য চিনা ব্যবসায়ীদের Silk Route ব্যবহারে উৎসাহ দেন তিনি।

তবে রানি হিসেবে নাকি মোটেই নরম মনের মানুষ ছিলেন না উ। অনেকের দাবি, তাঁর সুন্দর মুখের পিছনে লুকিয়ে ছিল নিষ্ঠুর চেহারা। ক্ষমতায় থাকতে সন্তানদেরও হত্যা করেন তিনি। এছাড়া জীবদ্দশায় অবলীলায় বিরুদ্ধ মত পোষণকারীদের হত্যার নির্দেশ দিতেন তিনি। ছিল তাঁর গুপ্তঘাতক বাহিনীও।

৭০৫ খ্রীষ্টাব্দের ২১ ফেব্রুয়ারি মৃত্যু হয় চিনা সাম্রাজ্ঞী উ-র। কুয়োংলিং এলাকায় তাঁকে সমাধিস্থ করা হয়। তবে উ-র মৃত্যুর পর টাং রাজবংশ বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। তাসের ঘরের মতো তা ভেঙে পড়ে। যদিও চিনে এই রানিকে নিয়ে আজও উৎসাহের শেষ নেই। মৃত্যুর পর রানি উ-কে সরকারিভাবে নানা সম্মানে ভূষিত করা হয়। পরবর্তীকালে তাঁর জীবনী অবলম্বনে তৈরি হয় একাধিক সিনেমা। জনপ্রিয় TV সিরিয়াল Empress of China-ও চিত্রনাট্যও ছিল উ-র জীবনকে কেন্দ্র করে।